• শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৫:৫৪ অপরাহ্ন

মাঠপর্যায়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট: বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ

Reporter Name / ৩৪ Time View
Update : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বর্তমানে দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের কার্যকারিতাকে সংকটাপন্ন করেছে। মাঠকর্মীরা জরুরি প্রয়োজনের সময় দম্পতিদের কনডম ও জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছেন, যা গর্ভনিয়ন্ত্রণে একটি গুরুতর সমস্যা।

সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১০৫টি উপজেলায় কনডমের মজুত নেই এবং ৪৪৫টি উপজেলায় খাওয়ার বড়ি নেই। জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কনডম ও বড়ির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এই সংকট দীর্ঘদিন ধরে চলমান। সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি অনুযায়ী, সংকট সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়ে গেছে।

ফ্যামিলি প্ল্যানিং অফিসের মহাপরিচালক জানান, পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে সমস্যাটি আরও গুরুতর হয়েছে। বর্তমানে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাঠকর্মীরা বিভিন্ন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ করেন, যার মধ্যে কনডম এবং বড়ি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।

সরকারি ও বেসরকারি উভয় সূত্র থেকে জানা যায়, সামগ্রীর অভাবের কারণে সক্ষম দম্পতিরা এখন বেসরকারি খাত থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সংগ্রহ করছেন। সামাজিকভাবে দরিদ্র শ্রেণির দম্পতিরা মূলত সরকারি পরিষেবার উপর নির্ভরশীল।

বর্তমানে, ৪৯৩টি উপজেলার জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর তথ্য প্রতিদিন হালনাগাদ করা হয়। তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ১০৫টি উপজেলায় কনডমের মজুত শূন্য, আর ১৯১টি উপজেলায় মজুত শূন্য হতে যাচ্ছে। খাওয়ার বড়ির অবস্থাও সংকটজনক, যেখানে ৪৪৫টি উপজেলায় এই সামগ্রী নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতির প্রধান কারণ হলো রাজস্ব বাজেট থেকে প্রয়োজনীয় খরচের অনুমতি না থাকা। উন্নয়ন বাজেট থেকে কেনাকাটা করতে হলে অনেক সময় লেগে যায়, যা সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ১০ শতাংশ দম্পতি প্রয়োজনীয় সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পান না। সংকটের ফলে অপরিকল্পিত গর্ভধারণের সংখ্যা বাড়তে পারে, যা মাতৃমৃত্যুর হারও বৃদ্ধি করবে। ২০৩০ সালের মধ্যে অপূর্ণ চাহিদার হার শূন্যে নামানোর আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশে স্বাধীনতা অর্জনের সময় মোট প্রজননের হার (টিএফআর) ছিল প্রায় ৬। কিন্তু বর্তমানে এটি ২.৩-এ নেমে এসেছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সঠিক বিতরণ নিশ্চিত করা হলে, টিএফআর আরও কমিয়ে আনা সম্ভব। তবে বর্তমান সংকটের সমাধান না হলে, জনগণের স্বাস্থ্য ও উন্নয়নের লক্ষ্যে আরও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/