• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০২:৪০ অপরাহ্ন

পুলিশের বদলি-পদোন্নতির ক্ষেত্রের অনিয়ম ও উদ্বেগ

Reporter Name / ৩৪ Time View
Update : শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে পুলিশের পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে উঠেছে। এক মাস পার হলেও পুলিশের কার্যক্রম পূর্ণরূপে স্বাভাবিক হয়নি। এখনকার সময়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেশিরভাগ মনোযোগ বদলি, পদোন্নতি এবং পদায়নের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত রয়েছে একটি প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের গ্রুপ, যা সম্প্রতি ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করছে এবং পেশাদারিত্বের বদলে ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি ও বদলি করে চলেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, এই গ্রুপ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ এবং বদলি করে নিয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে যে, কিছু প্রতারক চক্র পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন ইউনিটে বদলির ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করছে। এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে সকল পুলিশ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।

বদলি ও পদোন্নতির নতুন তালিকা অনুযায়ী, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ময়নুল ইসলাম। এরপর থেকে অন্তত ২২টি আদেশ জারি হয়েছে, যার ফলে চার শতাধিক কর্মকর্তার বদলি ও পদোন্নতি করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৩ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে এবং পাঁচজন চাকরি ফিরে পেয়েছেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে যে, পদোন্নতি-বদলি প্রক্রিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন বিসিএস ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ। তিনি রাজশাহীর সারদা বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার ছিলেন এবং বর্তমানে ডিএমপিতে পদায়ন হয়েছেন। এছাড়া, একটি রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসা নারী কর্মকর্তা এবং ডিআইজি মো. সরওয়ারও পদোন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের মধ্যে অভিযোগ উঠেছে যে, অনেক ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বের পরিবর্তে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি এবং বদলি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, কয়েকটি অভিযোগে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তর সতর্কতা জারি করেছে এবং বলেছে যে, বদলি-পদোন্নতি কার্যক্রম যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী করা হচ্ছে।

ডিএমপির মধ্যে বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন ২১তম ব্যাচের কর্মকর্তা উপকমিশনার তাহেরুল হক চৌহান। তিনি দাবি করেন, পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হচ্ছে এবং অভিযোগের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়া, পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে পুলিশের পুনর্গঠনের এবং পেশাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এই সময়ে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ঘুষ বা অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ বাহিনীর পুনর্গঠন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করা এখন একান্ত জরুরি। এর জন্য প্রয়োজন নতুন করে সমন্বয় এবং পেশাদার কর্মকর্তাদের সহায়তা, যাতে পুলিশ বাহিনী কার্যকরভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সক্ষম হয়।


More News Of This Category
https://slotbet.online/