• শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

বন্যা–পরবর্তী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়

Reporter Name / ৪৩ Time View
Update : রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস ও জাপান–বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের আয়োজনে ‘বন্যা–পরবর্তী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের সারমর্ম

ড. তাহমিদ আহমেদ
নির্বাহী পরিচালক, আইসিডিডিআর বি

  • ডায়রিয়া ও কলেরার চিকিৎসা: বন্যা পরবর্তী সময়ে ডায়রিয়া ও কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। খাবার স্যালাইন ও জিংক ব্যবহার করলে রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি কমানো যায়। এ জন্য পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন ও জিংক সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন এবং চিকিৎসকদের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত।
  • পানি বিশুদ্ধকরণ: বিশুদ্ধ পানির সংকট কাটাতে ডিপিএইচই’র পানি বিশুদ্ধকরণ মডেল অনুসরণ করা যেতে পারে। পানি সাফ করার জন্য কাপড়, ফিটকিরি, ব্লিচিং পাউডার বা হ্যালোট্যাব ব্যবহার করা উচিত।
  • হাত ধোয়া: কলেরা ও টাইফয়েডের বিস্তার রোধ করতে হাত ধোয়া ও পানি বিশুদ্ধকরণ গুরুত্বপূর্ণ। সোফিওয়াটার ব্যবহার করলে সস্তায় হাত ধোয়া সম্ভব।
  • ঝুঁকিপূর্ণ জনগণ: বিশেষভাবে পাঁচ বছরের কম শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, স্তন্যদানকারী মায়েরা, প্রবীণরা এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। তাদের খাদ্য ও ওষুধের যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে।

ডা. এ এস এম আলমগীর
আইএইচএম অফিসার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশ

  • স্বাস্থ্যসেবা ও ভ্যাকসিনেশন: বন্যা পরবর্তী মারাত্মক ডায়রিয়া ও কলেরার মহামারি ঠেকাতে পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি বিতরণ করা হচ্ছে। টিউবওয়েল পরিষ্কারকরণ, মাস্ক ব্যবহারের মাধ্যমে ঠান্ডা ও সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করতে হবে।
  • স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের পুনঃস্থাপন: বন্যায় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা খতিয়ে দেখে দ্রুত মেরামত করতে হবে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য: বন্যার পর মানসিক ট্রমা মোকাবেলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

নাঈম গোলদার
পরিচালক (চলতি দায়িত্বে), ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর

  • ওষুধ সরবরাহ: বন্যার পরবর্তী সময়ে ওষুধের ঘাটতি পূরণ করতে কাঁচামাল সহজলভ্য করতে হবে এবং ফার্মেসি পুনরায় কার্যকর করতে হবে।
  • সাপের উপদ্রব: সাপে কামড়ানো রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করা উচিত।
  • মানসিক স্বাস্থ্য: দুর্যোগ পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য বিশেষ তৎপরতা নেওয়া প্রয়োজন।

অধ্যাপক ডা. মো. জোনাইদ শফিক
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস

  • ত্রাণ ও ওষুধ বিতরণ: ফেনী ও কুমিল্লা অঞ্চলে ত্রাণ ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। স্যানিটারি প্যাড, ডায়াপার এবং শুকনা খাবার সরবরাহ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. রাশেদ মোহাম্মদ খান
অধ্যাপক, ডারমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

  • চর্মরোগ প্রতিরোধ: চর্মরোগ বিশেষ করে স্ক্যাবিস ও ফাঙ্গাল ইনফেকশন এ সময় বাড়তে পারে। পানি বিশুদ্ধকরণ এবং সোপিওয়াটার ব্যবহারের মাধ্যমে চর্মরোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

অধ্যাপক ডা. নাজলিমা নারগিস
অধ্যাপক (গাইনি ও অবস), ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

  • গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্য: গর্ভবতী নারীরা পানিবাহিত রোগের জন্য বিশেষ ঝুঁকিতে থাকে। নিরাপদ পানি ও মশারি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা প্রয়োজন।

ডা. মো. আব্দুল মাহিদ খান
ডায়াবেটিস ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল

  • ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসা: ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত ইনসুলিন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং ডায়রিয়া রোগীদের জন্য স্যালাইন ব্যবহারের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

ডা. গোলাম ফাহাদ ভুঞা
কিডনি বিশেষজ্ঞ, জাপান–বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল

  • ফেনী ও কুমিল্লা: ফেনী শহরের স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং কুমিল্লা শহরের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করতে হবে।

গওহার নঈম ওয়ারা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ

  • সাপের উপদ্রব: সাপের উপদ্রব মোকাবেলার জন্য দ্রুত অ্যান্টিভেনম সরবরাহ এবং পুকুর পরিষ্কার করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।

এই বৈঠকের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে সকল অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। বন্যার পরবর্তী সময়ে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো সম্ভব।


More News Of This Category
https://slotbet.online/