বন্যার কারণে দেশের পূর্বাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে ফেনী জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এখানে ৩৫১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা, ৫৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৪১টি কলেজ রয়েছে। এই জেলার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৮২ হাজার। অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে, এবং কিছু প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হয়নি। বন্যার পানি স্কুলের আসবাবপত্র, শিক্ষা উপকরণ, ভবন, সীমানাপ্রাচীর ও নলকূপ ধ্বংস করেছে। এর ফলে শিক্ষার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কিছু মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে পাঠদান শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি যথেষ্ট কম। কতটি প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, যে সব বিদ্যালয় পরিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে, সেখানে পাঠদান শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা, এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে ১৩ কোটি টাকা। ৪১টি কলেজের সব কটিতে পানি ঢুকেছে, যা প্রাথমিকভাবে তিন কোটি টাকার বেশি ক্ষতি করেছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) জানিয়েছেন যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। যেসব প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার হবে, সেখানে পাঠদান শুরু করা হবে। তবে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত বিষয়ও বিবেচনায় রাখতে হবে, কারণ অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও দুর্গন্ধময় হয়ে রয়েছে। বইপত্রের জন্য শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ফেনীসহ অন্যান্য বন্যাদুর্গত এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সরকারকে বাজেট বরাদ্দ, বই ও আনুষঙ্গিক সামগ্রী সরবরাহের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঠিক নির্দেশনা প্রদান করতে হবে, যাতে শিক্ষার পরিবেশ দ্রুত পুনরুদ্ধার করা যায়।