প্রকল্পটির নিয়ম অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা তাদের এলাকার বিভিন্ন অবকাঠামো যেমন রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে চিঠি পাঠাতেন। তারপর ওই অধিদপ্তর প্রকল্প বাস্তবায়ন করে দিত। কিন্তু, অভিযোগ উঠেছে যে অনেক সংসদ সদস্য তাদের ব্যক্তিগত আগ্রহের ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রাপ্ত অর্থের ব্যবহার করেছেন এবং দলীয় স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রকল্পের কাজ করার জন্য অনৈতিকভাবে ঠিকাদার নিয়োগ করেছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর সাবেক দুই সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও ওমর ফারুক চৌধুরী এবং তাদের অনুসারীদের বিরুদ্ধে প্রকল্পের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। কিছু সংসদ সদস্য প্রকল্পের অর্থ কর্ম না করেই তুলে নিয়েছেন, যা প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও ব্যবহারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানান, সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব আইন প্রণয়ন করা, এবং স্থানীয় উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হলেও, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। প্রকল্পের অর্থ খরচের নামে ব্যাপক দলীয়করণের অভিযোগ উঠে এসেছে। এর ফলে জনগণের অর্থের যথাযথ ব্যবহার হয়নি।
উল্লেখযোগ্য যে, প্রকল্পটির আওতায় ২০২০ সালে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা এবং এটি ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত চলার কথা ছিল। যদিও, ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পের প্রথম চার বছরে মোট বরাদ্দের ৬৫ শতাংশ অর্থ খরচ করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হওয়া এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে এই প্রকল্পের কার্যকারিতা কার্যত বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার কারণে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির বাতিলের জন্য কাজ করছে। অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেওয়া ও অর্থনৈতিকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবং এমপিদের প্রকল্পের তালিকা প্রাথমিকভাবে বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
যেসব প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, সেগুলোর সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা হতে পারে বলে জানা গেছে। অতীতে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এমপিদের জন্য এমন প্রকল্পটি কয়েকবার পুনঃসূচনা হয়েছিল, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।