• শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন

বন্যা-পরবর্তী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান

Reporter Name / ৪৬ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পানি কমে যাওয়ার পর স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে। বর্তমানে ডায়রিয়া, কলেরা এবং চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের পানি বিশুদ্ধকরণ ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া উচিত এবং অপুষ্টি রোধে কম খরচে পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করা উচিত। এছাড়া প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা ও ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে জনগণকে তথ্য সরবরাহ করা প্রয়োজন।

মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে এসব মতামত তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা। বৈঠকটি যৌথভাবে আয়োজিত হয় নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের উদ্যোগে, এবং সহযোগিতায় ছিল অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।

আইসিডিডিআরবি’র নির্বাহী পরিচালক তাহমিদ আহমেদ বলেন, বন্যার পর পানিশূন্যতা, ডায়রিয়া ও কলেরা বাড়ছে। শিশুদের পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করতে স্যালাইন ও জিংক খুবই কার্যকর। পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ফিটকিরি এবং ব্লিচিং পাউডার ব্যবহারের উপায় শেখানো জরুরি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশের সংক্রামক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর বলেন, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত। বন্যার পর টয়লেট ও হাসপাতালের বর্জ্যের কারণে পানির মান খারাপ হতে পারে, তাই সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে একটি সম্মিলিত পরিকল্পনা জরুরি।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক নাঈম গোলদার জানান, বন্যায় ওষুধের ঘাটতি পূরণে কাঁচামালের সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। কিছু কোম্পানি বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছে এবং সাপের উপদ্রবের জন্য অ্যান্টিভেনম মজুত রাখা হচ্ছে।

নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক মো. জোনাইদ শফিক জানান, ফেনী ও কুমিল্লার বুড়িচং এলাকায় তাদের প্রতিষ্ঠান বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপারের চাহিদা অনুভব করেছে। তিনি বলেন, পানি ও পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা গেলে রোগের প্রাদুর্ভাব ৮০ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, বন্যার পর আহতদের সেবা প্রদান ও পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করতে হবে। পুকুরের পানি চুন দিয়ে পরিষ্কার করে গোসলের উপযোগী করা যেতে পারে। শিশুদের অপুষ্টি রোধে মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করতে হবে।

জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সরদার এ নাঈম রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বাদ দিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে সেবা কার্যক্রম চালানোর জন্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং মসজিদের ইমামদের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রাশেদ মোহাম্মদ খান এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নাজলিমা নারগিসের মতামত অনুযায়ী, চর্মরোগ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

এছাড়া, গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধি এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।


More News Of This Category
https://slotbet.online/