• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন

দুর্যোগ: আল্লাহর পরীক্ষা এবং ধৈর্যের গুরুত্ব

Reporter Name / ৪৩ Time View
Update : শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৪

দুর্যোগ বা বিপদ-আপদ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানুষের জন্য এক ধরনের পরীক্ষা। কোরআন মাজিদে উল্লেখ রয়েছে, “আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জানমাল ও ফলফসলের ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও, যারা নিজেদের বিপদের সময় বলে ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী’; তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও করুণা এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।” (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭)।

এটি স্পষ্ট যে, আল্লাহর পরীক্ষা হিসেবে নানা প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ আমাদের জীবনে আসে। এগুলো অন্তর্ভুক্ত করে ঝড়, ভারী বর্ষণ, সাইক্লোন, শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খরা, ভূমিকম্প, সাগরের পানি বিপৎসীমায় পৌঁছানো, নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করা, দুর্ভিক্ষ, মহামারি, অগ্নিকাণ্ড, বন্যা, শৈত্যপ্রবাহ, দাবদাহ, অগ্ন্যুৎপাত, লাভা উদগিরণ ইত্যাদি।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, “মানুষের কৃতকর্মের কারণে স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় প্রকাশ পায়। যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাদের কিছু কৃতকর্মের স্বাদ তাদের আস্বাদন করান, যাতে তারা (সুপথে) ফিরে আসে।” (সুরা-৩০ রুম, আয়াত: ৪১)। এছাড়া, “তোমাদের ওপর যেসব বিপদ-আপদ আপতিত হয়, তা তোমাদেরই কর্মফল। তিনি অনেক গুনাহ মাফ করে দেন।” (সুরা-৪২ শূরা, আয়াত: ৩০)।

বিপদের সময় আল্লাহর কাছে তওবা করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা সুন্নত। যতক্ষণ বান্দা তাওবা ও ইস্তিগফার করতে থাকে, ততক্ষণ আল্লাহর আজাব আসে না। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, “যে মাপে কম দেবে, সে দুর্ভিক্ষ, মৃত্যুযন্ত্রণার এবং শাসক কর্তৃক জুলুমের শিকার হবে। যে জাতির মধ্যে ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়ে, সেখানে (ক্রমাগত) অনাবৃষ্টি দেখা দেয়।” (তাফসিরে রুহুল মাআনি: ১১/৭৩; তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন: ৬/৭৫৩)।

ঝড়-তুফানের সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করা সুন্নত। বৃষ্টির সময় পাঠনীয় দোয়া হলো, “আল্লাহুম্মা ছাইয়েবান নাফিআ” (হে আল্লাহ! উপকারী বৃষ্টি দিন)। ঝড়ের সময় পড়ার দোয়া, “আল্লাহুম্মা হাওয়ালাই না, ওয়া লা আলাইনা” (হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে ফিরিয়ে নিন, আমাদের ওপর দেবেন না)। বজ্রপাতের সময় দোয়া করা উচিত, “আল্লাহুম্মা লা তাকতুলনা বিআজাবিকা ওয়া লা তুহলিকনা বিগদাবিকা ওয়া আফিনা কাবলা জালিকা” (হে আল্লাহ! আজাব ও গজব দিয়ে আমাদের ধ্বংস ও নিঃশেষ করে দেবেন না; তার আগেই আমাদের ক্ষমা করে দিন)।

দুর্যোগের সময় আমাদের উচিত সহানুভূতি ও সহযোগিতা প্রদর্শন করা। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়ানো এবং দ্বীনের ওপর অটুট থাকা উচিত। হাদিস শরিফে আছে, “যখন কোথাও ভূমিকম্প হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝড়ে বাতাস বা বন্যা হয়; তখন মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে অতি দ্রুত তওবা করা, তার নিকট নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা এবং মহান আল্লাহকে অধিক হারে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা।” (বুখারি: ২/৩০; মুসলিম: ২/৬২৮)।

আমাদের জন্য উচিত আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা, নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াত বৃদ্ধি করা এবং দান-সদকা করা। এভাবেই আমরা আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা পেতে পারব এবং দুর্যোগের সময় সাহস ও ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করতে সক্ষম হব।


More News Of This Category
https://slotbet.online/