পাকিস্তানে গত এক মাস ধরে ইন্টারনেটের ধীরগতিতে বিপাকে পড়েছে দেশটির ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। এই সমস্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। অবশেষে পাকিস্তানের টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ (পিটিএ) ইন্টারনেটের ধীরগতির প্রকৃত কারণ জানিয়েছে। তাদের মতে, সাবমেরিন কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে পিটিএ জানায়, পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত সাতটি সাবমেরিন কেব্লের মধ্যে দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই কারণে দেশজুড়ে ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কমে গেছে। তবে পিটিএ আশা করছে, আগামী অক্টোবরের শুরুর দিকেই এই সমস্যার সমাধান হবে।
পাকিস্তানের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসের শুরু থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ কম গতি পাচ্ছেন। এতে হোয়াটসঅ্যাপ ও ভিপিএন ব্যবহারে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ইন্টারনেটের এই ধীরগতি নিয়ে আগে কোনো মন্তব্য করেনি পাকিস্তান সরকার বা পিটিএ।
এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্র ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে হুমকি ও অবমাননাকর বিষয় ঠেকাতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনা হবে।’ তবে ইন্টারনেটের ধীরগতির পেছনে সরকারের কোনো হাত নেই বলে পরে দাবি করেন পাকিস্তানের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী শাজা ফাতিমা খাজা। তার মতে, অতিরিক্ত ভিপিএন ব্যবহারের কারণেই ইন্টারনেটে ধীরগতি অনুভূত হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের ইন্টারনেট সমস্যার মূল লক্ষ্যবস্তু হতে পারে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই)। দলটির নেতা-কর্মীদের ওপর দমন–পীড়ন চালাচ্ছে সরকার। এরপরও পিটিআইয়ের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি, বিশেষ করে প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণদের মধ্যে। ইন্টারনেটের ধীরগতি হয়তো তাদের অনলাইন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে হতে পারে।
এভাবে ইন্টারনেটের ধীরগতির সমস্যা অব্যাহত থাকলে দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি ও সাধারণ ব্যবহারকারীদের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।