• শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন

রাজনৈতিক কার্টুনের নতুন দিগন্ত: ফিরে আসছে বিদ্রোহের ভাষা

Reporter Name / ৫৩ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪

সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিল্প ও সাহিত্যের বিভিন্ন মাধ্যমে বিদ্রোহের ভাষা স্পষ্ট হয়েছে। কবিতা, গান, র‌্যাপ, পোস্টার, কার্টুন এবং গ্রাফিতি সবই এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে। রাজনৈতিক কার্টুনও এই বিদ্রোহী ভাষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।

ফেসবুকে এক পুরোনো কার্টুন নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা শুরু হয়েছে। ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রথম আলো ফেসবুক পেজে প্রকাশিত কার্টুনটি, যা শেখ হাসিনা ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়ে আঁকা হয়েছিল, আবারো সবার নজরে এসেছে। একটি মন্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, “এটি ২০১৩ সালের কার্টুন। এ সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এমন সাহসী কার্টুন ছাপানো সম্ভব নয়।”

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকাগুলোতে রাজনৈতিক কার্টুনের উপস্থিতি কমে গিয়েছিল। গত কয়েক বছরে পত্রিকায় প্রকাশিত কার্টুনগুলো মূলত নির্লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। ফেসবুকে ঐ পুরোনো কার্টুন নিয়ে আলোচনা চলার সময়, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, শিশির ভট্টাচার্য্য কেন এখন আর রাজনৈতিক কার্টুন আঁকেন না। যদিও এর সঠিক কারণ জানা যায়নি, তবে রাজনৈতিক চাপই সম্ভবত এর অন্যতম কারণ।

শিশির ভট্টাচার্য্য বাংলাদেশের কার্টুনশিল্পের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। যখন তিনি রাজনৈতিক কার্টুন আঁকতে পারছিলেন না, তখন নবীন কার্টুনিস্টদেরও একটি বার্তা পৌঁছেছিল—বাংলাদেশে রাজনৈতিক কার্টুন নিষিদ্ধ। তবে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর, রাজনৈতিক কার্টুনের পুনরাবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে কার্টুনিস্টরা এই শূন্যতা পূরণ করতে শুরু করেছেন এবং এর ফলে রাজনৈতিক কার্টুন আবারও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে।

এই নতুন আবির্ভাবের প্রমাণ হিসেবে ১৬ আগস্ট ঢাকার পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে শুরু হয়েছে “কার্টুনে বিদ্রোহ” শিরোনামে একটি প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আঁকা কার্টুনগুলো নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, স্যাটায়ার পোর্টাল ‘ইআরকি’ এবং দৃক এর আয়োজক। প্রদর্শনীতে ৮২ জন কার্টুনিস্টের ১৭৫টি কার্টুন প্রদর্শিত হচ্ছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ কার্টুনিস্টদের কাজ।

কার্টুনিস্ট মেহেদী হক, যিনি দীর্ঘ সময় ধরে রাজনৈতিক কার্টুনের ক্ষেত্রে কাজ করছেন, এই পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, “রাজনৈতিক ঘটনাবলীর ওপর কার্টুনের ভূমিকা অপরিসীম। সাম্প্রতিক আন্দোলনে কার্টুনের পরিমাণ ও প্রভাব অভূতপূর্ব।” তিনি আরও জানান, “আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, তরুণ কার্টুনিস্টরা এখন রাজনৈতিক কার্টুনে নতুন মাত্রা যোগ করছেন।”

এছাড়া, মাসিক রম্য সাময়িকী উন্মাদ-এর সম্পাদক আহসান হাবীব মন্তব্য করেন, “কার্টুনে স্যাটায়ারের উচ্চতম স্তর হলো ল্যাম্পুন। সাম্প্রতিক কার্টুনগুলো দেখলে বোঝা যায়, তরুণ কার্টুনিস্টরা এখন সেটাও স্পর্শ করছে।”

এই নতুন প্রেক্ষাপটে, রাজনৈতিক কার্টুন আবারও এক নতুন জীবন পেয়েছে এবং এটি নিশ্চিতভাবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি শক্তিশালী চিত্র তুলে ধরছে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/