• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৭:০৯ অপরাহ্ন

চ্যাটজিপিটি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে এর প্রভাব: বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

Reporter Name / ৪৩ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪

২০২২ সালের শেষে চ্যাটজিপিটি চালু হওয়ার পর প্রথম সপ্তাহেই এটি প্রায় ১০ লাখ ব্যবহারকারীর মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এআই-এর এই নতুন টুলটি প্রতিদিনের জীবনে নানা প্রভাব ফেলছে, এবং এটি শিক্ষাক্ষেত্রে কী ধরনের পরিবর্তন এনে দিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে চ্যাটজিপিটির প্রভাব কেমন, তা জানতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

চ্যাটজিপিটি ভার্চুয়াল চরিত্র তৈরি করা সহজ করেছে, তবে এটি পড়াশোনার ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন আনেনি। জার্মানির হামবুর্গের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমনটাই জানাচ্ছেন। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী টোবিয়াস বলছেন, “আমি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করি গবেষণার কাজে। এটি আমাকে একটি বিষয় ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে। গুগলের পরিবর্তে আমি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করি কোনো বিষয়ের বিস্তারিত জানার জন্য।”

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এলিয়েশা জানান, “চ্যাটজিপিটি মাঝে মাঝে অদ্ভুতভাবে লেখা দেয়, তাই আমি সাধারণত সার্চ ইঞ্জিনেই অনুসন্ধান করি।” আরেক নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইওশা বলেন, “আমি নিজের কাজের দায়িত্ব নিতে চাই। আমি চাই আমার কাজ নিজে করতে। তাই চ্যাটজিপিটি আমার জন্য খুব প্রাসঙ্গিক নয়।”

চ্যাটজিপিটি চালু হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা এটি বিদ্যালয়ে এবং হোমওয়ার্ক তৈরিতে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। তবে শিক্ষকরা বুঝতে পেরেছেন, শিক্ষার্থীরা কী করতে পারে এবং এআই কিভাবে সহায়তা করতে পারে, তা জানা প্রয়োজন।

হামবুর্গের ভাল্ডডর্ফার গিমনাজিউমের প্রধান শিক্ষক ইয়র্গেন সলফ বলেছেন, “এটি নতুন কিছু হিসেবে দেখার প্রয়োজন নেই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজের অংশ হিসেবে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে। আমরা টুলের পরিবর্তে কাজের প্রতি গুরুত্ব দিতে চাই। ফলাফল দ্রুত পাওয়া আকর্ষণীয় হলেও এটি আমাদের জন্য সহায়ক নয়।”

চ্যাটজিপিটি সাধারণত যে কোনো বিষয় সম্পর্কে দ্রুত ধারণা প্রদান করতে সক্ষম, তবে এটি আসলে বুদ্ধিমত্তা কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। জার্মান ইথিক্স কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ইউডিথ সিমন বলেন, “চ্যাটজিপিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গুরুত্ব সামনে নিয়ে এসেছে। যদিও অনেক মানুষ এটি ব্যবহার করছেন, তাঁরা এটিকে বুদ্ধিমত্তা হিসেবে দেখছেন না। ফোন আনলক করা, সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করা, সুপারিশ খোঁজা—এইসবও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অংশ, কিন্তু চ্যাটবটের মত প্রতিক্রিয়া না থাকায় এর গুরুত্ব বুঝতে পারা কঠিন।”

বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কীভাবে ব্যবহার করা উচিত। চ্যাটজিপিটি পর্নোগ্রাফি, সহিংসতা উসকে দেয়া বিষয়, ভুয়া খবর এবং ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করতে সক্ষম। নৈতিক ফিল্টার কিছুটা শনাক্ত ও বাতিল করতে পারে, কিন্তু অনেকের পক্ষে এসব বোঝা সম্ভব নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত বিকাশ অনেককেই উদ্বিগ্ন করছে, যা মহামারি এবং পারমাণবিক যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।

হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেনেস ফেডেরাথ মন্তব্য করেছেন, “ড্রোন প্রশিক্ষণে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করা হলে এবং সেগুলোর স্বতন্ত্র লক্ষ্য নির্ধারণ করার অনুমতি দেওয়া হলে, বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগজনক। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে।”


More News Of This Category
https://slotbet.online/