একই বিষয় কর্ণাটক রাজ্যেও আলোচিত হয়েছে। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্ক করে কংগ্রেস নেতা একটি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাজ্যপাল যদি নিয়ন্ত্রণে না আসেন, তাহলে তাঁর পরিণতি শেখ হাসিনার মতো হতে পারে।
কর্ণাটকের শাসক দল কংগ্রেসের এই হুমকির পেছনে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। বিজেপি সরকারের নিযুক্ত রাজ্যপাল সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি দিয়েছেন, যা কংগ্রেসের রোষের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যজুড়ে রাজ্যপালবিরোধী বিক্ষোভ চলেছে এবং রাজ্যপালকে অপসারণের দাবি উঠেছে।
কংগ্রেস নেতা ও বিধায়ক ইভান ডিসুজা জানিয়েছেন, যদি কেন্দ্র রাজ্যপালকে সরিয়ে না নেয়, তবে রাজ্যজুড়ে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং রাজ্যপালের অবস্থা শেখ হাসিনার মতো হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, জমি বণ্টনে তাঁর স্ত্রীকে অবৈধভাবে লাভবান করা হয়েছে। এই অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে মামলা করা হয়েছে। রাজ্যপাল থাবরচাঁদ গেহলট এই মামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছেন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজ্যপাল রাজনৈতিক কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁরা দাবি করছেন, রাজ্যপাল কংগ্রেস সরকারকে হেনস্তা করতে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। থাবরচাঁদ গেহলট, যিনি ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন, বর্তমানে কর্ণাটকের রাজ্যপাল হিসেবে কাজ করছেন।
রাজ্যপালবিরোধী আন্দোলনে সিদ্দারামাইয়া কর্ণাটক হাইকোর্টের সহায়তা নিয়েছেন। হাইকোর্ট জানিয়েছে, ২৯ আগস্ট পর্যন্ত নিম্ন আদালত বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে না, যা মুখ্যমন্ত্রীকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।
সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর স্ত্রীকে অবৈধভাবে জমি দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, তিনি কোনো বেআইনি কাজ বা দুর্নীতির সাথে জড়িত নন এবং বর্তমান পরিস্থিতি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা তথ্য জানার অধিকার আন্দোলনের একজন কর্মী জানিয়েছেন, ২০২১ সালে মাইসুরু আরবান উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর তিন একর জমি ছিল এবং এই জমির বাজারমূল্য আইন অনুযায়ী অন্যত্র দেওয়ার তুলনায় বেশি। মুখ্যমন্ত্রী এই জমির কথা তাঁর হলফনামায় উল্লেখ করেননি।
সিদ্দারামাইয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন আদালতে বিচারাধীন। কংগ্রেস মনে করে, বিজেপি–জেডিএসের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে রাজ্যপাল থাবরচাঁদ গেহলটের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। নিরস্ত না হলে রাজ্যপালের অবস্থা শেখ হাসিনার মতো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।