পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে শিল্পী সমিতির সভাপতির আসনে বসেন নিপুণ। জানা গেছে, নিপুণের শিল্পী সমিতির ওপর প্রভাব খাটাতে একজন রাজনৈতিক নেতা সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছিলেন। সেই সময় নির্বাচন কমিশনারদের ওপর ব্যাপক চাপ ও ভয়ভীতি প্রয়োগ করা হয়েছিল। ভোট গণনার সময় থেকেই হুমকি আসতে শুরু করে, এবং ফলাফল ঘোষণার সময় পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার পিরজাদা হারুন জানান, তিনি পাঁচবার শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ২০২২ সালের নির্বাচনে তার ওপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়, যা তাকে মানসিকভাবে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। হারুন বলেন, ‘নিপুণকে জয়ী করানোর জন্য একজন ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ বারবার ফোন করেন। ওই সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে সরাসরি প্রভাব খাটাতেন। নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছিলেন। আমি প্রত্যাখ্যান করি, এবং তিনি জানতেন যে আমাকে কিনতে পারবে না।’
হারুন আরো বলেন, ‘তখন আমাকে ভয় দেখানো হয়, বড় অঙ্কের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ভয় দেখানোর জন্য নানা কৌশল প্রয়োগ করা হয়। এক সময় ফলাফল নিয়ে মামলা করা হয় এবং সেখানেও হয়রানি করা হয়। আমাকে রাজনৈতিকভাবে ছোট করা হয় এবং এফডিসিতে নিষিদ্ধ করা হয়।’
২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে পরাজিত হন নিপুণ। ফলাফলের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেন, কিন্তু সেখানেও একই ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন কমিশনের অন্য সদস্যরা জানিয়েছেন, এমন আতঙ্কের মুখোমুখি হওয়ার কথা ভাবেননি। কিছু সদস্য তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাননি।
পরে মামলায় গিয়ে শিল্পী সমিতির চেয়ারে নিপুণ বসেন এবং দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি হেরে যান, সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল নির্বাচিত হন। নিপুণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে নির্বাচিতদের কার্যক্রম স্থগিতের জন্য হাইকোর্টে রিট করেন, কিন্তু এতে খুব একটা সুবিধা হয়নি।
নিপুণের রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরুর সময় থেকে শেখ সেলিমের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তাঁর রাজনৈতিক যোগাযোগ বাড়ে এবং ২০১২ সালে শেখ সেলিমের উদ্বোধন করা পার্লারে এসে আলোচনায় আসেন। তবে নিপুণের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একাধিক বার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।