• বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০১:২৫ অপরাহ্ন

নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনদের চ্যালেঞ্জ

Reporter Name / ৩৮ Time View
Update : শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৪

বিপর্যস্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে, বাংলাদেশের অনেক পরিবার এখনো নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে পাওয়ার আকাক্সক্ষা নিয়ে কাটাচ্ছে দিন। হাসিনা সরকারের পতনের পর, কিছু গুমের শিকার ব্যক্তি, যেমন ব্যারিস্টার আহমেদ বিন কাশেম আরমান এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল আমান আজমি, গোপন বন্দীশালা ‘আয়না ঘর’ থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তবে, এর পরেও বেশ কিছু নিখোঁজ ব্যক্তির whereabouts সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা এখনো হতাশাজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি। সামাজিক মাধ্যম এবং প্রকাশিত গোপন নথির মাধ্যমে তাদের নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের খবর পেয়ে অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এসব নিখোঁজ ব্যক্তিরা কখনো কারো সন্তান, কখনো ভাই, কখনো স্বামী অথবা বাবা। পরিবারগুলো দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছে এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তাদের সন্ধান বের করার দাবি তুলেছে।

বিগত কয়েক সপ্তাহে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর ডিজিএফআই কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং সিটিটিসি কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্ধান করছেন ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের সমন্বয়কারী সানজিদা ইসলাম। তিনি আদালত থেকে শুরু করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান পর্যন্ত সকলের সাথে যোগাযোগ করে নিখোঁজদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।

সানজিদা ইসলাম জানান, গত পনের বছরে প্রায় ছয় শতাধিক গুমের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অনেকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, কিছু ব্যক্তি ফিরে এসেছেন, কিন্তু অনেকেই এখনও নিখোঁজ। তিনি বলছেন, ‘ঢাকার বাইরে থাকা পরিবারগুলোও নিখোঁজদের ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছে। সঠিক সংখ্যা হয়তো দেড়শো বা দু’শোও বেশি হতে পারে। এমনকি ছাত্র আন্দোলনের সময়ও অনেককে গুম করা হয়েছিল। তাই এই বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান হওয়া প্রয়োজন।’

মানবাধিকার কর্মীরা সরকারের কাছে একটি কমিশন গঠন করার দাবি জানাচ্ছেন, যা দ্রুত পরিবারগুলোকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান জানাবে। নূর খান লিটন, যিনি দীর্ঘদিন ধরে গুমের ঘটনার ওপর কাজ করছেন, বলেন, ‘অনেক পরিবার দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে অন্যত্র বিয়ে করেছে, সম্পত্তির ভাগ নিতে পারছে না এবং নানা ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে।’ তিনি জানান, ‘একটি নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে তদন্ত করা উচিত এবং গুমের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। আমরা প্রতিশোধ চাই না, শুধু ন্যায্য বিচার চাই।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, যখন এই সাক্ষাৎকারটি নেয়া হয়েছিল, তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছে। তিনি বলেন, ‘নিখোঁজ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কারা এবং কীভাবে এসব ঘটেছে তা একটি বড় ধরনের তদন্তের বিষয়। আগামী কেবিনেটে এই বিষয়টি আলোচনায় আসবে এবং কমিশন গঠন করে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পরিবারগুলোর প্রতি কিছুটা ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, এই সমস্যা সমাধানে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।


More News Of This Category
https://slotbet.online/