তহশিল অফিস ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোর প্রতি ঘুষ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রায়ই উঠে থাকে। তহশিল অফিসগুলোতে ভূমি খাজনা এবং ভূমি নামজারির মতো কাজ করা হয়। অন্যদিকে, সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে জমির দলিল এবং সরকারি অন্যান্য দলিল বা চুক্তিপত্র নিবন্ধন করা হয়। এসব অফিস সরকারের রাজস্ব আদায়ের বড় উৎস হলেও, অভিযোগ রয়েছে যে এখানে আদায়কৃত রাজস্বের তুলনায় বহু গুণ অবৈধ লেনদেন হয়ে থাকে। যদিও সংবাদমাধ্যমে এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিয়মিত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, দুর্নীতির মাত্রা কমেনি। অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও, পরিস্থিতি তেমনভাবে পরিবর্তিত হয়নি।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকার তহশিল অফিসের সঙ্গে জড়িত একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সম্প্রতি চরমভাবে ভুক্তভোগী হয়েছেন। তাঁর জমিসংক্রান্ত কাজে নিয়মিতভাবে ঘুষ দিতে হয় এবং সরকার পরিবর্তনের পর ঘুষের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। যেখানে আগে দুই লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হতো, সেখানে বর্তমানে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছে। এই একক অভিযোগই ঘুষ–বাণিজ্যের ভয়াবহতা তুলে ধরে।
রাজশাহীর বাঘা সাবরেজিস্ট্রি অফিসেও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতীতে আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্যের প্রভাবে চাঁদাবাজি চলছিল। এমনকি এই চাঁদাবাজির কারণে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে এক উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা প্রাণ হারান। সরকারের পরিবর্তনের পর, সেই চাঁদাবাজি এখন বিএনপি নেতাদের দখলে চলে গেছে।
এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, তহশিল ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে সব ধরনের অবৈধ লেনদেন বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথভাবে জবাবদিহির আওতায় আনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করা হোক।